পুলিশ প্রযোজিত ‘টাকা বিলি’র নাটক স্টাফ রিপোর্টার টাইম নিউজ বিডি, ২৯ এপ্রিল, ২০১৫ ০৭:০২:২৪ সোমবার বেলা দেড়টা। ৩২১ আহমদনগর নিজ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে শারফিন আক্তার। হঠাৎ নোয়া গাড়ি থেকে সাদাপোশাকে নেমে এল একদল পুলিশ। মিনিট কয়েকের মধ্যে শারফিনকে তুলে নিয়ে গেল তারা। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে টিভি চ্যানেলের কল্যাণে ঢাকাবাসী জানতে পারল, মিরপুর মডেল থানার পুলিশ নির্বাচনের আগের দিন টাকা বিলানোর সময় নারীসহছয়জনকে আটক করেছে। শারফিন ঢাকা উত্তরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি-সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী রুনু আক্তারের মেয়ে। ওই একই ওয়ার্ডে শারফিনের বাবা শওকত আলীও কমিশনার ছিলেন। শারফিন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি পড়ছেন। মাকে পুলিশি হয়রানি থেকে রক্ষা করতে নিজেই নির্বাচন পরিচালনা করছিলেন। সোমবার দুপুর থেকে শারফিন মিরপুর থানায় আটক ছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। মিরপুর থানায় গিয়ে ওসি সালাউদ্দিনকে পাওয়া যায়নি। ওসি (তদন্ত) মইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জাতীয় ইস্যু নিয়ে ব্যস্ত। আপনাকে বুঝতে হবে কোনটা মেজর, কোনটা মাইনর ইস্যু। আমার ডিউটি অফিসার সময় পেলে কথা বলবে।’ টাকা বিলানোর প্রসঙ্গ তোলার আগেই তিনি বলেন, ‘শারফিনকে তিন লাখ টাকাসহ আটক করা হয়েছে। এটা তো আমরা মেক করিনি।’ গতকাল সকালে শারফিনদের দোতলা বাড়িটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে কথা হয় শারফিনের সঙ্গে আটক হওয়া অপর যুবক জনির এক স্বজনের সঙ্গে। তিনি জানান, রুনু আক্তারের বাড়ির সামনে প্রায়ই পুলিশ টহল দেয়। এ ঘটনার আগেও পুলিশ এসেছে। দিনদুপুরে সবার চোখের সামনে পুলিশ শারফিনকে তুলে নিয়ে গেছে। ভয়ে কেউ মুখ খোলেনি। সোমবার শারফিনের সঙ্গে আটক হন আরও পাঁচজন। তাঁদের একজন সামিরুল বশির। বাঙলা কলেজের ছাত্র বশির রুনু আক্তারের পক্ষে আহমদনগর এলাকায় নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছিলেন। ওই দিন পুলিশ শারফিনের সঙ্গে বশিরকেও যখন গাড়িতে তোলে, তখন তাঁর ফুফু শাহিদা বেগম ছুটে আসেন। কোথায়, কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, জানতে চান তিনি। এ সময় ‘দারোগা রাশেদ’ তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। মাকে ফেলে দিচ্ছে দেখে ছুটে আসেন ছেলে রুহুল আমিন জনি। শারফিনের বাড়ির পাশে জনির একটি ফ্লেক্সিলোডের দোকান আছে। জনিকেও পুলিশ তুলে নেয় গাড়িতে। ওই একই ঘটনায় আটক হন আরও তিনজন। তাঁরা হলেন মো. শামছুদ্দিন, মো. রাফি আহাম্মেদ ও মো. নজরুল ইসলাম। পুলিশের এজাহার: চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত থেকে পাওয়া যায় এজাহার। পুলিশের এসআই রফিকুল ইসলাম মামলার এজাহারে লিখেন, কাউন্সিলর পদপ্রার্থী রুনু আক্তার ও বিএনপি-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিদ আউয়ালের পক্ষে ভোট কেনার জন্য ভোটারদের মধ্যে নগদ টাকা ও লিফলেট বিতরণ করতে গেলে স্থানীয় জনগণ আটক করেন। সূত্র: প্রথম আলো এএইচ
No comments:
Post a Comment