Tuesday, January 27, 2015

‘যারা সংলাপের বাণী কপচাচ্ছে, তাদের অধিকাংশই ভণ্ড’:RTNN

‘যারা সংলাপের বাণী কপচাচ্ছে, তাদের অধিকাংশই ভণ্ড’ নিউজ ডেস্ক আরটিএনএন ঢাকা: বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে যারা শান্তি ও সংলাপের তাগিদ দিচ্ছেন ‘তাদের অধিকাংশই ভণ্ড’ বলে মন্তব্য করেছেন লন্ডন প্রবাসী কলামিস্ট আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী। মঙ্গলবার দৈনিক কালের কণ্ঠের নিয়মিত কলামে তিনি লিখেছেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে যা চলছে তা রাজনৈতিক সংঘাত নয়; এটা দুই বিপরীতমুখী শক্তির মধ্যে অস্তিত্ব রক্ষার সংঘা
ত। ১৯৭১ সাল থেকে এই যুদ্ধের শুরু। চার দশকে দুই পক্ষের জয়-পরাজয়ের মধ্য দিয়ে সংঘাতটি শেষ পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। এই সংঘাতে নিরপেক্ষ সাজার কোনো অবকাশ নেই। যারা নিরপেক্ষ সেজে শান্তি ও সংলাপের বাণী কপচাচ্ছে, তাদের অধিকাংশই ভণ্ড। মূলত তাদের ভূমিকা স্বাধীনতার শত্রুপক্ষের সহায়ক পঞ্চম বাহিনীর (Fifth Column) ভূমিকা। দেশপ্রেমিক মানুষদের তাই এদের ভূমিকা সম্পর্কেই বেশি সতর্ক থাকতে হবে।’ কট্টর আওয়ামীপন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী লিখেছেন, দেশে বর্তমানে একটি যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। এটা একাত্তরের যুদ্ধেরই শেষ পর্যায়। যুদ্ধরত দুই পক্ষেরই বিভাজনটি স্পষ্ট। এটা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে কোনো রাজনৈতিক যুদ্ধ নয়। এটা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের ও বিপক্ষের শক্তির মধ্যে শক্তি পরীক্ষা। স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি সর্বশক্তি প্রয়োগে মরণ ছোবল হেনেছে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি যদি সর্বশক্তি প্রয়োগে এই ছোবল প্রতিহত করতে না পারে, তাহলে দেশটির স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। তার মত, বাংলাদেশেও আজ ধর্মীয় ও মৌলবাদী ফ্যাসিবাদের হিংস্র অভ্যুত্থানের মোকাবিলায় দেশপ্রেমিক সব দলমতের মানুষের একাট্টা হওয়া প্রয়োজন। একাত্তরের মতো ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। শিশুঘাতী-নারীঘাতী সন্ত্রাসের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া আবশ্যক। এই সন্ত্রাস রাজনৈতিক আন্দোলনের মুখোশে ঢাকা বর্বর গণহত্যা। উদ্দেশ্য রাজনৈতিক ক্ষমতার হাতবদল নয়; রাষ্ট্রের চরিত্র ও অস্তিত্ব বদল। তার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব খর্ব করে ফেলা। তিনি লিখেছন, এই হুমকি ও হামলার মোকাবিলা সংলাপ দ্বারা হবে না। ফ্যাসিবাদকে শান্তির ললিত বাণী শুনিয়ে লাভ হয় না। দেশের যে সুধীসমাজ, আরো স্পষ্ট ভাষায় সুবিধাভোগী এলিট ক্লাস নিজেদের কায়েমি স্বার্থ রক্ষার তাগিদে সংলাপ সংলাপ বলে চিৎকার জুড়েছে, আক্রমণকারী ও আক্রান্তকে একই দাঁড়িপাল্লায় তুলে তাদের মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতার দাবি তুলছে, তাদের উদ্দেশ্য ও দেশপ্রেম সম্পর্কে অবশ্যই প্রশ্ন তোলা যায়। আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী লিখেছেন, সম্প্রতি আমি কলকাতায় গিয়েছিলাম। কলকাতার বন্ধুরা বললেন, আপনাদের এক শ্রেণির মিডিয়া কী প্রচার করছে? তারা কি হরতাল ও অবরোধের অর্থ জানে না? হরতাল হলে রাজধানীর রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে যাবে। অবরোধ হলে দেশের প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি বা অফিস, সচিবালয়, কিংবা বড় বড় বাণিজ্যকেন্দ্র ঘেরাও হবে। রাজধানীর রাস্তাঘাট অবরুদ্ধ হয়ে যাবে। বাংলাদেশে তার কিছুই হয়নি। বরং যে নেত্রী অবরোধের ডাক দিয়েছেন, তিনিই নিজগৃহে অবরুদ্ধ হয়ে বসে আছেন। হরতালে রাজধানীর অবস্থা অনেকটাই স্বাভাবিক। যা চলছে, তা হচ্ছে চোরাগোপ্তা হামলায় সাধারণ মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা। এটা বর্বরতা। কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, হরতাল-অবরোধ তো নয়ই। তিনি লিখেছেন, আমি কলকাতায় সাংবাদিক বন্ধুদের সঙ্গে একমত হয়েছি। আমাদের মিডিয়ার খবরের হেডিং হওয়া উচিত ছিল, ‘হরতাল-অবরোধের ডাক ব্যর্থ; দেশের সর্বত্র ব্যাপক নাশকতা’। তার দাবি, ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় উপচে পড়া মানুষের ভিড় এবং ফেব্রুয়ারির একুশে বইমেলার বিরাট প্রস্তুতি দেখেও মনে হয় দেশে অচলাবস্থা ও অরাজকতা সৃষ্টির সব চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে। ‘এই পরিস্থিতিতে বেগম জিয়া তার দ্বিতীয় পুত্র কোকোর মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী হাসিনা তাঁকে সান্ত্বনা জানাতে গেলে ঘরের দরজা বন্ধ রেখে দেখা না করায় আরো কোণঠাসা হয়েছেন। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সমবেদনার বদলে তিনি পাচ্ছেন বিরূপ সমালোচনা। দলের সহকর্মীরা অসত্য প্রচার দ্বারাও এই পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছেন না,’ লিখেছেন আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী। মন্তব্য      


No comments:

Post a Comment